ছোট ব্যবসার আইডিয়া - নতুন ব্যবসার আইডিয়া

প্রিয় পাঠক আপনি কি ছোট ব্যবসা করার সিধান্ত নিচ্ছেন? কিন্তু বুঝে উঠতে পারছেন না কোন ব্যবসা করলে সফল হওয়া যায়। তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আজকের আর্টিকেলে আমরা কিছু ছোট ব্যবসার আইডিয়া এবং তার সাথে নতুন ব্যবসার আইডিয়া আপনার সামনে তুলে ধরবো যেগুলো করে আপনি সফল হতে পারবেন।

ছোট ব্যবসার আইডিয়া

চাকরি করতে যাওয়া মানে প্রতিযোগিতার লাইনে দাড়ানো। চাকরি পাওয়া বর্তমানে খুবই কঠিন একটি কাজ। বেকারের সংখ্যাও দিন দিন বেড়ে চলেছে। তাই এখন মানুষ বেকারত্ব জীবন থেকে মুক্তি পেতে ছোট ব্যবস্যা করার সিধান্ত নিচ্ছে। তবে আমাদের মধ্যে অনেকের ধারনা রয়েছে যে বেশি মূলধন ছাড়া ব্যবসায় সফল হওয়া যায় না। এই ধারনা বদলানোর সময় এসেছে। এখন স্বল্প পুঁজি দিয়ে ছোট ব্যবসা করে সফল হওয়া যায়। তাই আমাদের জানতে  হবে কি ধরনের ছোট ব্যবসা করে,  কিভাবে আমরা আত্মকর্মসংস্থান তৈরি করতে পারবো। আজকের আর্টিকেলটি পড়ে বিষয়গুলো জেনে নিন।

১০ হাজার টাকার ব্যবসার আইডিয়া

বর্তমানে এখন প্রায় সকল মানুষ আত্মনির্ভশীল হতে চাই। আমাদের অনেকের কাছে কম মূলধন আছে তবে ভেবে পাচ্ছি না কম মূলধনে ব্যবসা করে লাভজনক হতে পারবো কী? হ্যাঁ বর্তমান সময়ে সেটা সম্ভব হচ্ছে। ১০ হাজার টাকার মধ্যে অনেক ব্যবসা রয়েছে যেগুলো আপনি করতে পারেন। তবে আপনার অবস্থান, দক্ষতা ও যোগ্যতার উপর ভিত্তি করে সঠিক ব্যবসা বাছাই করবেন । ১০ হাজার টাকার মধ্যে কয়েকটি লাভজনক ব্যবসা আপনার সামনে তুলে ধরা হলো-

ফুচকার ব্যবসা: প্রথমেই বলি কোনো কাজই ছোট নয়। ছোট ব্যবসা সৎভাবে করলে অনেক টাকা উপার্জন করা যায়। আমরা ফুচকা প্রায় সবাই পছন্দ করি। এ ব্যবসায় ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা খুবই কম। ফুচকা ব্যবসায়ীদের মাসিক আয় ২৫ থেকে ৩০ হাজার পর্যন্ত হয়ে থাকে। ভালো একটা জায়গা দেখে যেখানে মানুষ বেশি চলাচল করে, স্কুলের আশেপাশে বা পার্কে নিদিষ্ট কোনো স্থানে ফুচকার দোকান দিতে পারেন। 

জুসবারের ব্যবসা: কোনো মুক্ত স্থান বা পার্কের পাশে জুসবারের ব্যবসা চালু করতে পারেন। কিছু ফলমূল, চিনি, পানি এবং ব্লেন্ডার এসব উপকরন এসব ব্যবসায় প্রয়োজন। ১০ হাজার মতো টাকা দিয়েই এ ব্যবসা শুরু করা যায়। 

দর্জির দোকান: আপনাদের মধে কেউ যদি সেলাইয়ের কাজে অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে ১০ হাজার টাকা দিয়ে একটি সেলাই মেশিন এবং সেলাইয়ের ব্যবহৃত জিনিসপত্র কিনে বাড়িতেই এ ব্যবসা শুরু করতে পারেন। 

বিউটিশিয়ান: আপনি যদি ভালো বিউটিশিয়ান হয়ে থাকেন তবে ১০ হাজার টাকা দিয়ে এ ব্যবসা চালু করতে পারেন। তবে সাবধান থাকতে হবে স্কিনের ক্ষতি করে এমন কসমেটিক্স ব্যবহার করা  যাবেনা। 

মেকআপ আর্টিস্ট: আপনি যদি ভালো মেকআপ করতে পারেন তাহলে ১০ হাজার টাকার মধ্যে ভালো মেকআপ করার সামগ্রি কিনে মেকাপ আর্টিস্ট হতে পারেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মেকাপ আর্টিস্ট বাসায় এনে অল্প সময়ে মেকআপ করিয়ে নেয়। 

খাবারের হোম ডেলিভারি: আপনি যদি ভালো রান্না করতে পারেন তাহলে আপনার এ দক্ষতাকে ব্যবসার কাজে লাগাতে পারেন। প্রতিদিন হটেলের খাবার অনেকেই খেতে চাইনা। বাড়িতে রান্না করে বিভিন্ন স্থানে খাবার পৌঁছে দিতে হবে। ১০ হাজার টাকা দিয়ে এ ব্যবসা শুরু করা যায়।

অনলাইন বেকারি: আপনি যদি অনেক ধরনেন কেক, কুকিস বানাতে পারেন। তাহলে আপনার বানানো কেক ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। জন্মদিন, অ্যানিভারসারির অনুষ্ঠানে এর ব্যপক চাহিদা রয়েছে। ১০ হাজার টাকা থাকলে এ ব্যবসা করা যায়। 

নাচ গান বা আঁকার স্কুল: আপনি যদি এসব  বিষয়ে পারদর্শি হন তাহলে আপনার এ দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। তবে এ ব্যবসায় অনেক ধের্য লাগবে। লোকমুখে আপনার এ ব্যবসা প্রচার হওয়ার পর , ব্যবসা চলবে। 

চায়ের দোকান: চায়ের ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনাকে একটা ছোট দোকান বানাতে হবে চাইলে ভাড়া নিতে পারেন। কিনতে হবে কিছু বেঞ্চ, আর টেবিল ১০ হাজার টাকার মধ্যে হয়ে যাবে। 

ঘরে বসে কাপড়ের ব্যবসা: মহিলাদের জন্য এ ব্যবসা খুবই সুবিধা। তবে যে কেউ এ ব্যবসা করতে পারেন। পাইকারি বাজার থেকে কম দামে পন্য কিনে আনুন। মহিলাদের গজ কাপড়, থ্রি পিস, বাচ্চাদের পোশাক, বিছানার চাদর, ছুট ওড়না ইত্যাদি পন্য কিনে প্রথমে শুরু করবেন। ১০ হাজার টাকা দিয়ে প্রথমে শুরু করে পরে ব্যবসা বড় করতে পারবেন। 

ফুড ও সবজি ভ্যান: এ ব্যবসাটি শুরু করতে একটি ভ্যান বা ঠেলাগারি কিনতে হবে। ১০ হাজার টাকার মধ্যে গাড়ি ও চাল ডাল , বিভিন্ন রকমের টাটকা শাকসবজি নিয়ে আপনার আশেপাশের এলাকায় বিক্রি করতে পারেন। 

টিউশন সেন্টার: আপনার মধ্যে শিক্ষকতার দক্ষতা থাকলে নিজের বাড়িতে বা কোথাও ছোট একটি রুম ভাড়া নিয়ে টিউশন সেন্টার চালু করতে পারেন। চেয়ার, টেবিল, বোর্ড  ১০ হাজার টাকার মধ্যে হয়ে যাবে। 

মোবাইল সার্ভিসিংয়ের দোকান: মোবাইল সাভিসিংয়ের কাজ যদি আপনার জানা না থাকে তাহলে শিখে এই ব্যবসা চালু করতে পারেন। সার্ভেসিংয়ের কাজে ব্যবহৃত সামগ্রি ১০ হাজারের মধ্যেই পেয়ে যাবেন। 

মাশরুম চাষ: অল্প জায়গার মধ্যেই আপনার বাড়ির উঠানে মাশরুম চাষ করতে পারেন। মাশরুম চাষ একটি লাভজনক ব্যবসা। ১০ হাজার টাকা থাকলেই এ ব্যবসা শুরু করা যায়। 

শিশুদের খেলনার দোকান: শিশুরা খেলনা খুবই ভালোবাসে আর তাই তাদের বাবা মারাও শিশুর জন্য খেলনা কিনতে খুবই আগ্রহী। ১০ হাজার টাকা দিয়েই এ ব্যবসা শুরু করতে পারেন। লাভবান হতে পারবেন। 

১০ হাজার টাকা দিয়ে উপরে বলা ব্যবসাগুলোর মধ্যে আপনার পারফেক্ট ব্যবসাটি বাছাই করে নিন। যে ব্যবসা শুরু করতে যাবেন সে ব্যবসা সম্পর্কে অবশ্যই আপনার ধারনা থাকতে হবে। তা না হলে আপনার ব্যবসায় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।

আরো পড়ুন: সফলতা কিভাবে আসে - জীবনে সফলতা অর্জনের উপায়

গ্রামে ছোট ব্যবসার আইডিয়া

গ্রামের ব্যবসা করার মাধ্যমে বেকারত্ব থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছে অনেকেই। সঠিক ব্যবসার আইডিয়া জেনে গ্রামে থেকে ব্যবসা করেও লাভজনক হওয়া যায়। অনেকেই মনে করেন গ্রামে ব্যবসা করে লাভজনক হওয়া যায়না। তবে সততার মাধ্যমে ব্যবসা করলে গ্রামে থেকেও ব্যবসা করে লাভবান হওয়া যায়। কয়েকটি ছোট ব্যবসার আইডিয়া আপনাদের জন্য তুলে ধরা হলো-

তাজা ও ফরমালিনমুক্ত সবজির ব্যবসা: সবজি ও ফলের চাহিদা এখন অনেক বেশি দেখা যাচ্ছে গ্রামঞ্চলে। সারাবছর চাষ কর যায় এমন সবজি বাছায় করতে হবে। সবজি গুলো চাইলে আপনি নিজেই চাষ করতে পারেন। এরপর সেগুলো গ্রামে বা বাজারে বিক্রি করে অনেক লাভবান হওয়া যায়। 

মাছ ও মুরগির যৌথ ব্যবসা: মাছ ও মুরগির যৌথ ব্যবসা করলে খরচ কম হয়। এর জন্য নিজের পুকুর না থাকলে পুকুর বর্গা নিতে পারেন এর জন্য গ্রামাঞ্চলে তেমন খরচ হয় না। পুকুরে বিভিন্ন ধরনের দেশি মাছের চাষ করবেন এবং পুকুরের উপরে বাঁশের মাচা তৈরি করে তাতে মুরগি পালন করবেন। এতে মাছের খাবারের খরচ অনেকটাই কম লাগবে। মুরগির বিষ্ঠা থেকে মাছের খাবার হয়ে যাবে। 

তেলের ব্যবসা: বর্তমান যুগে খাঁটি তেল পাওয়া বেশ কঠিন। আপনি যদি খাঁটি তেলের ব্যবসা করেন তাহলে ব্যবসায় অনেক লাভবান হতে পারবেন। সেখানে বিভিন্ন ধরনের তেল রাখতে পারেন। সয়াবিন, নারিকেল সরিষার মতো আরও অনেক তেল। সততার সাথে গ্রামে এ ব্যবসা করে লাভবান হতে পারবেন। 

মিষ্টির দোকান: আপনি আপনার এলাকায় মিষ্টির দোকান দিতে পারেন। মিষ্টির চাহিদা প্রায় সবসময় থাকে। মিষ্টি বানাতে না জানলে মিষ্টি বানানোর জন্য লোক রেখে এ ব্যবসা করতে পারবেন। 

ছাগল পালন: গ্রাম অঞ্চলে এটি একটি ভালো ব্যবসা। তবে এ ব্যবসায় মুলধন একটু বেশি লাগবে এবং ১ বিঘা মতো জমির প্রয়োজন হয়। 

মুদি দোকান: অল্প পুঁজি দিয়ে এ ব্যবসা শুরু করা যায়। গ্রামে দোকানের ভারা অনেক কম। আপনার পুঁজি অনুযায়ী  মুদি পন্য কিনে এ ব্যবসা শুরু করবেন। 

সার, বীজ ও কীটনাশকের দোকান: গ্রামঞ্চলে এগুলোর চাহিদা অনেক বেশি। গ্রামে থেকে ব্যবসা করার জন্য এ ব্যবসা বাছাই করে নিতে পারেন। এ ব্যবসায় অনেক লাভবান হওয়া যায়। 

রাইস মিলের ব্যবসা: আপনার যদি কোনো ফাঁকা জায়াগা থেকে থাকে তাহলে সেখানে এ ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এ ব্যবসার জন্য আপনাকে একটি রাইস মিল কিনতে হবে। দৈনিক আপনি গ্রামে বসে ১ থেকে ২ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারবেন।  

ওষুদের দোকান: গ্রামাঞ্চলে ওষুদের দোকান প্রায় দেখা যায় না বললেই চলে। এর জন্য গ্রামের মানুষকে ওষুদের জন্য দূরে যেতে হয়। এমন পরিস্থিতে ওষুদের দোকান খুবই লাভজনক একটি ব্যবসা। 

পুরোনো বইয়ের ব্যবসা: আমাদের গ্রাম এলাকায় এ ব্যবসা দেখা যায় না। পুরোনো বইয়ের বিশাল বাজার থেকে বই কিনে এ ব্যবসা করতে পারেন অনেক লাভবান হতে পারবেন। 

এগুলো ছাড়াও গ্রামঞ্চলে যে ব্যবসা গুলো করতে পারেন সেগুলো হলো- গ্যাসের চুলা ও সিলিন্ডারের ব্যবসা, কাঁচামালের ব্যবসা, আইসক্রিমের ব্যবসা, নার্সারির ব্যবসা, কম্পিউটার ও ফটোকপির দোকান, চায়ের দোকান, বিভিন্ন আচার বিক্রির ব্যবসা, মধু বিক্রি, কলা বিক্রির ব্যবসা, মুরগি বিক্রয় ইত্যাদি। 

শহরে ব্যবসার আইডিয়া

ব্যবসা সম্পর্কে ধারনা না থাকলে লাভবান হওয়া যায় না।  শহরে যারা ব্যবসা করতে চান তাদের জন্য কিছু ব্যবসার আইডিয়া দিব যেগুলো করে সফল হতে পারবেন। শহরে যে ব্যবসাগুলো করবেন-

কফি শপ: কফি কম বেশি সবাই পছন্দ করে। শহরের মানুষেরা চা এর থেকে কফি বেশি পছন্দ করে। কফি ব্যবসা করার জন্য একটা দোকান তৈরি করতে পারেন অথবা রাস্তায় বিক্রি করতে পারেন। কফি ভালোভাবে তৈরি করবেন যাতে সবার পছন্দ হয় তাহলে আপনার কফির চাহিদা বাড়বে। 

লন্ড্রির দোকান: শহরের মানুষ অনেক ব্যস্ত থাকার ফলে নিজের কাপড় নিজেরা ধুতে ও আয়রন করার সময় পায় না। তাই শহরের মানুষেরা বাইরে থেকে এসব কাজ করে নেয়। তাই শহরে এটি একটি লাভজনক ব্যবসা। 

ট্রাভেল এজেন্সি: ভ্রমনকারীদের বিভিন্ন পর্যটন স্থানে ভিড় রয়েছে। তারা অনেকেই আছে যাদের ভ্রমনের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানা নেই। তাই তাদের ট্রাভেল এজেন্সির খোঁজ করে থাকে। শহরে এর ব্যপক চাহিদা রয়েছে। 

রেস্তরা: শহর এলাকায় রেস্তরার চাহিদা অনেক বেশি। সেখানে আপনি রেস্তরার ব্যবসা খুলতে পারেন। শহরে আরও অনেক রেস্তরা থাকে তাদের থেকে সর্বত্তোম খাবার তৈরির চেষ্টা করবেন। 

জিম সেন্টার: শহরে আপনি একটা জিম সেন্টার খুলে সেখান থেকে বব্যসা করতে পারেন। শহরে প্রায় সবাই জিমের প্রতি আসক্ত। তাই শহরে এ ব্যবসা করে লাভবান হতে পারবেন। 

মিনারেল ওয়াটারের ব্যবসা: কম খরচে শহরাঞ্চলে খুব সহজেই এ ব্যবসা করতে পারেন। শহরের মানুষেরা মিনারেল ওয়াটার পানির প্রতি ঝোক বেশি। এ ব্যবসায় আপনাকে পানির ড্র্রাম গুলোকে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিতে হবে। আপনি চাইলে শহরে এ ব্যবসা করতে পারেন। 

কসমেটিকের দোকান: শহরাঞ্চালে কসমেটিকের দোকানে প্রায় ভিড় লেগেই থাকে। আপনার পুঁজি অনুযায়ী পন্য কিনে এ ব্যবসা শুরু করবেন। ভালোমানের পন্য কিনার সবসময় চেষ্টা করবেন। 

সুপার শপের দোকান: শহরের মধ্যে ভালো একটি স্থান দেখে এ ব্যবসা শুরু করবেন। এ ব্যবসা করে খুব সহজেই আপনি টাকা ইনকাম করতে পারবেন। শহরে এ ব্যবসা খুবই জনপ্রিয় এবং লাভজনক।

গাড়ি পরিষ্কারের কাজ: শহরের মানুষেরা ব্যস্ত থাকার ফলে গাড়ি ধোয়ার সময় পায় না। তবে তারা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পছন্দ করে। তাই শহরে এ ব্যবসা করতে পারেন লাভবান হওয়া যাবে। 

ফুড ভ্যান: আপনার ফুড ভ্যানে রাখতে পারেন রোল, চাউমিন, বার্গার, স্যান্ডউইচের মতো খাবার। খাবার অবশ্যই সুস্বাদু হতে হবে তাহলে চাহিদা বাড়বে। শহরে এটি লাভজনক ব্যবসা। 

এ ছিল শহরের ব্যবসার আইডিয়া । ব্যবসা শুরু করার আগে অবশ্যই যে ব্যবসা করবেন সেটা নিয়ে সম্পূর্ন ধারনা নিয়ে নিবেন।

আরো পড়ুন: ব্যবসা করতে কি কি প্রয়োজন - ব্যবসা শুরু করার পদ্ধতি

স্টক ব্যবসার আইডিয়া

স্টক ব্যবসা বর্তমান সময়ে একটি লাভজনক ব্যবসা। স্টক ব্যবসা হলো সিজনে একত্রে অনেকগুলো পন্য কিনে সে পন্য গুলো মজুদ রেখে দাম যখন বৃদ্ধি পাবে তখন সেগুলোকে বিক্রি করে দেওয়া। এ ব্যবসা নির্ভেজাল এবং লাবজনক। অনেক ধৈর্য ও প্ল্যানিং সাজিয়ে এ ব্যবসা করতে হবে। চলুন তাহলে বর্তমান সময়ে লাভজনক স্টক ব্যবসার আইডিয়া দেওয়া যাক-

পেঁয়াজ ও রসুনের স্টক ব্যবসা: রান্নার প্রধান উপকরনের তালিকায় পড়ে পেঁয়াজ ও রসুন। পেঁয়াজ, রসুনের চাহিদা সবসময় থাকে। পোঁয়াজ ও রসুন যে সময় তোলা হয় সে সময়ে যে দাম থাকে পরবর্তিতে তা দুই থেকে তিনগুন বেড়ে যায়। অনেক সময় আরও বেশি বেড়ে যায়। তাহলে বুঝতেই পারছেন পেঁয়াজ রসুন স্টক করে রাখলে কত লাভবান হতে পারবেন। পেঁয়াজ ও রসুন পচনশীল দ্রব্য তাই আপনি কোল্ড স্টোরের সাথে যোগাযোগ করে সেখানে পেঁয়াজ ও রসুন রাখতে পারেন। সে অনুযায়ী ভাড়া দিয়ে দিবেন। 

আলুর স্টক ব্যবসা: আলু প্রায় আমরা রান্নার কাজে ব্যবহার করে থাকি। সারাবছরই এর চাহিদা থাকে। তবে সারাবছর আলু উৎপাদন হয় না। শীতের সময় আলুর দাম কম থাকে। আপনি সে সময় আলু কিনে স্টক করে রাখলে পরবর্তিতে সেটা বিক্রি করে অনেক লাভবান হতে পারবেন। 

ধানের স্টক ব্যবসা: আমাদের কৃষিপ্রধান দেশে প্রায় প্রতিবছর ধান উৎপাদন হয়। আমাদের দেশের মানুষের প্রধান খাদ্য হলো ভাত। তবে সময়ে ধানের দাম অনেক বেড়ে যায়। তাই আপনি ধান স্টক করে রাখলে দাম বাড়ার সময় বিক্রি করলে অনেক লাভ করতে পারবেন। 

সুপারির স্টক ব্যবসা: আশ্বিন ও কার্তিক মাসে বাংলাদেশে সুপারি উৎপন্ন হয়। এ সময় সুপারি কিনে স্টক করে রেখে সুপারির সিজন চলে গেল স্টক করা সুপারির দাম বেড়ে যায়। 

কাপড়ের স্টক ব্যবসা: শীতকালে গরমের পোষাকের দাম কম হয় আর  গরমে শীতের পোষাকের দাম কমে যায়। তাই আপনি শীতকালে গরমের পোষাক এবং গরমে শীতের পোষাক ক্রয় করে মজুদ রাখুন। আলাদা আলাদা সিজনে বিক্রয় করবেন। 

গম ও ভূট্টা:  গম ও ভূট্টা পচনশীল দ্রব্য নয়। তাই এগুলো খুব সহজেই স্টক করে রাখতে পারবেন। ভূট্টা ও গম বছরে একবার উৎপন্ন হয় তবে এর চাহিদা ব্যপক। সিজনে কিনে মজুদ রেখে  বে সিজনে সেগুলো বিক্রয় করবেন। 

ডিম স্টক ব্যবসা: ডিমের দাম সবসময় উঠানামা হতেই থাকে। আপনি  চাইলে ডিম স্টক ব্যবসা করতে পারেন। তবে ডিমে স্টক করতে খুবই সতর্ক থাকতে হবে। তাপমাত্রায় দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। তবে এ ব্যবসা সঠিকভাবে করতে পারলে সফল হতে পারবেন। 

বাদামের স্টক ব্যবসা: বাদাম সংরক্ষন করে বছরের পর বছর গুদামজাত করা সম্ভব। তাই এ ব্যবসা করা সুবিধাজনক। যে জায়গায় বাদামের উৎপাদন বেশি হয় সেখান থেকে বাদাম কিনে মজুদ রাখুন। পরবর্তিতে দাম বেড়ে গেলে তা বিক্রি করুন। বাদামের ব্যবসা প্রায় কম লোক করে থাকে এই ব্যবসায় লাভের সম্ভাবনা বেশি। 

আদা মসলার ব্যবসা: রান্নার জন্য সবার মসলা প্রয়োজন। এ মসলার চাষ বাংলাদেশে কম হয়ে থাকে তাই এগুলোর দাম তুলনামূলক ভাবে বেশি হয়ে থাকে। এইসব মসলাগুলো স্টক রেখে দাম বাড়লে বিক্রি করলে অনেক লাভবান হওয়া যায়।

ডালের স্টক ব্যবসা: ডাল বাঙালিদের অনেক প্রিয় একটি খাবার। ডাল স্টক রেখেও আপনি ব্যবসা করতে পারবেন। সিজনে ডালের দাম কম থাকে কিন্তু সিজন পার হলে ডালের দাম অনেক বেড়ে যায়। সিজনে ডাল স্টক রেখে দাম বেড়ে গেলে বিক্রি করবেন। 

এছারাও যে পন্যগুলো স্টক রাখতে পারবেন সেগুলো হলো- খেজুর, সিগারেট, ইট (বর্ষাকালে দাম বাড়ে), ইত্যাদি। এসব পন্য মজুদ রেখেও ব্যবসা করা যায়।

স্টক ব্যবসায় সফল হতে চাইলে পচনশীল পন্য কিনে মজুদ রাখবেন না। একসাথে অনেক টাকার পন্য না কিনে অল্প অল্প করে কয়েক ধরনের পন্য কিনবেন। আরেকটা জিনিস মাথায় রাখবেন সেটা হলো সঠিকভাবে পন্য সংরক্ষন করা। তাহলে ব্যবসার ক্ষতির সম্ভাবনা থাকবে না। 

পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া

পাইকারি ব্যবসা হলো আমদানি কারকের কাছ থেকে আপনার পুঁজি অনুযায়ী পন্য কিনে তা খুচরা বাজারে বিক্রি করা। কোন পাইকারি ব্যবসা ভালো হবে আমরা অনেকেই বুঝে উঠতে পারি না। তাই আপনাদের জন্য কয়েকটি পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া দিব এর যেকোনো একটি বেছে নিতে পারেন। 

মুদি সামগ্রির পাইকারি ব্যবসা: মুদির দোকানে যেসব সামগ্রী বিক্রি করা হয় সেসব পন্য কোম্পানির ডিস্ট্রিবিউটরের কাছ থেকে পাইকারি ভাবে পন্য কিনে খুচরো ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করুন। কোন পন্যের চাহিদা বেশি সেদিকে নজর দিবেন। 

কাপড়ের পাইকারি ব্যবসা: এটি একটি লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া। এ ব্যবসায় মূলধন একটু বেশি প্রয়োজন। কাপড়ের ব্যবসার মধ্যে শাড়ির ব্যবসায় লাভজনক বেশি হওয়া যায়। তাঁতিদের কাছে  পাইকারি দামে শাড়ি কিনে ছোট ছোট দোকানগুলোতে পৌঁছে  দিতে হবে। ব্যবসায় লাভবান হওয়ার পর বড় দোকানে শাড়ি সাপ্লাই দেওয়া শুরু করবেন। 

বাচ্চাদের খেলনা পাইকারি ব্যবসা: বাচ্চারা সবাই খেলনা পছন্দ করে। তাই যারা খেলনা তৈরি করে তাদের কাছে কম দামে খেলনা কিনে এলাকায় দোকানগুলোতে পৌঁছে দিন। খেলনার সঠিক দাম কোনো গ্রাহক সহজে বলতে পারে না। তাই এর লাভ বেশি হয়। 

ফলের পাইকারি ব্যবসা: বর্তমান সময়ে ফলের চাহিদা প্রায় বেড়েই চলেছে। ফলের বড় মার্কেট থেকে পাইকারি দামে ফল পাওয়া যায়। সেখান থেকে ফল ক্রয় করে বিভিন্ন দোকানে পৌঁছে দিতে হবে। 

জুতার পাইকারি ব্যবসা: এই ব্যবসা সঠিক ভাবে করলে এর লাভের পরিমান অনেক বেশি। অনলাইনেও এ ব্যবসা করতে পারেবেন।

মুড়ি ও চিড়ার ব্যবসা: এই ব্যবসায় শ্রম ও মুলদধন কম লাগে। যারা মুড়ি ও চিড়া উৎপাদন  করে তাদের কাছে কম দামে কিনে খুচরা বাজারে বিক্রি করতে পারেন। চাইলে আপনি নিজে চাল কিনে বাড়িতে মুড়ি ও চিড়া উৎপাদন করতে পারেন তাহলে লাভ বেশি হবে। 

মাছের খাবারের ব্যবসা: এলাকায় এ ব্যবসা প্রায় কম করে তাই এটি আপনি করে সফল হতে পারবেন। তবে এ ব্যবসাই আপনি নিজেই মাছের খাবার তৈরি করবেন। এসব মাছের খাবারের চাহিদা অনেক বেশি। মাছ দ্রুত বড়  হয়। 

শাক সবজির পাইকারি ব্যবসা: এটি একটি লাভজনক পাইকারি ব্যবসা। কৃষকের হাত থেকে সরাসরি কিনে খুদরো ব্যবসায়ীদের কাছে দ্বিগুন দামে বিক্রি করতে পারবেন।  তবে এ ব্যবসায় মূলধন বেশি লাগে। 

সরিষার ব্যবসা: কৃষকের কাছ থেকে সরিষা কিনে বড় বড় কোম্পানিতে বিক্রি করে দিবেন। সরিষার চাহিদা বর্তমানে অনেক বেড়েছে।  তাই এ ব্যবসায় অনেক লাভ করা যায়। 

কসমেটিকসের ব্যবসা: বর্তমানে মেয়েদের কসমেটিকসের উপর ব্যপক চাহিদা। বড় বড় কোম্পানি থেকে এ পন্য কিনে তারপর আপনার এলাকায় দোকান গুলোতে দিয়ে দিলে এ থেকে প্রচুর লাভবান হওয়া যায়। 

এগুলো ছাড়াও আপনি পাইকারিভাবে করতে পারেন শার্ট প্যান্টের ব্যবসা, চালের ব্যবসা, ডিমের ব্যবসা, চা পাতার ব্যবসা, ইলেকট্রনিক পন্যের ব্যবসা, ব্যাগের ব্যবসা, ঘড়ির ব্যবসা, মোবাইল পার্টসের ব্যবসা, সয়াবিন তেলের ব্যবসা ইত্যাদি।

উপরে উল্লেখিত যেকোনো একটি ঠিক করে আপনি পাইকারি ব্যবসা শুরু করতে পারেন। মুলধন দেখে ব্যবসা শুরু করুন। ব্যবসা কিছুদিন চলার পর আশা করি উন্নতি হবে। এরপর আপনি ব্যবসার জন্য ট্রেড লাইসেন্স সহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বানিয়ে নিবেন। এ ছিল ব্যবসা সম্পর্কে সকল ধরনের আইডিয়া। আশা করি আমার বলা তথ্য থেকে উপকৃত হবেন।

লেখকের শেষ বক্তব্য

ছোট ব্যবসার আইডিয়া - নতুন ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে আজকের এই ব্লগে সকল তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি ছোট ব্যবসার আইডিয়া - নতুন ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনি এই ধরনের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ব্লগ পোস্ট নিয়মিত পড়তে চান তাহলে আপনাকে প্রতিনিয়ত আমাদের এই ওয়েবসাইট ফলো করতে হবে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url