দারিদ্র বিমোচনে গ্রামীণ ব্যাংকের ভূমিকা
বাংলাদেশের একটি ক্ষুদ্র ঋন প্রদানকৃত সংস্থার নাম হলো গ্রামীণ ব্যাংক। দারিদ্র বিমোচনে গ্রামীন ব্যাংকের ভূমিকা রয়েছে। এ বিষয়টি আমরা কেউ জানি আবার কেউ জানিনা। তবে দারিদ্র বিমোচনের জন্য বিষয়টা আমাদের জানা জরুরি। দারিদ্র বিমোচনে গ্রামীন ব্যাংকের ভূমিকাগুলো কি কি সেটা আমরা আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করবো।
আপনি যদি দারিদ্র বিমোচনে গ্রামীণ ব্যাংকের ভূমিকাগুলো জানতে চান। তাহলে আমাদের পুরো আর্টিকেলটি আপনাকে পড়তে হবে। এই আর্টিকেলটি পড়লে জেনে যাবেন দারিদ্র বিমোচনে গ্রামীন ব্যাংকের ভূমিকা সম্পর্কে। তাহলে চলুন দারিদ্র বিমোচনে গ্রামীণ ব্যাংকের ভূমিকা এবং তার সাথে গ্রামীন ব্যাংক সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
গ্রামীণ ব্যাংকের ইতিহাস
গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৯৮৩ সালের ২ অক্টোবর। গ্রামীন ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা হলেন প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুস, যিনি ২০০৬ সালে নোবেল শান্তি পুরষ্কার পেয়েছিলেন। এ ব্যাংকটি দারিদ্র মানুষের কাছে কোনো প্রকার জামানত ছাড়াই ক্ষুদ্রঋন দিয়ে থাকে। এ ব্যাংটি ১৯৮৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হলেও এর সূচনা হয়েছিল তার আগে থেকেই অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের হাত ধরে। একটি গবেষনা প্রকল্পের মাধ্যমে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস দারিদ্রদের ব্যাংকিং সেবা প্রদানের উদ্দেশ্যে একটি ঋন সরবরাহ ব্যাবস্থা করার পরিকল্পনা করেন।
১৯৭৪ সালে যখন দুর্ভিক্ষ হয়, ঠিক সে সময় অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ২৭ মার্কিন ডলার ব্যক্তিগত ঋন ৪২ টি পরিবারের একটি গ্রুপকে দেওয়ার মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। সে থেকে তিনি বিশ^াস করলেন যে এ ধরনের ঋন বাংলাদেশের গ্রামীন দারিদ্র দূর করতে সহায়তা করবে। এ থেকেই মুহাম্মদ ইউনুস তার অভিজ্ঞতা দিয়ে গ্রামীন ব্যাংকের নীতি তৈরি করেছিলেন। জোবরা গ্রামে গ্রামীন প্রকল্প প্রথম চালু করা হয়েছিল। এরপর ১৯৭৯ সালে টাঙ্গাইল ও চট্টগাম জেলার বেশ কয়েকটি গ্রামে এর সম্প্রসারণ ঘটে। পরবর্তীতে প্রকল্পটি ১৯৮২ সালে রংপুর, ঢাকা ও পটুয়াখালী জেলায় সম্প্রসারিত হয়। জাতীয় আইন দ্বারা ১৯৮৩ সালে গ্রামীন ব্যাংককে স্বাধীন ব্যাংকের মতো পরিচালনার অনুমতি দেওয়া হয়। এখন দারিদ্রদের জন্য প্রকল্পটি ব্যাংকিং কাঠামোতে উন্নীত হয়েছে।
বর্তমানে গ্রামীন ব্যংকের ২৫৬৫ টি শাখা রয়েছে যার ফলে বাংলাদেশের অনেক মানুষের কর্ম নিশ্চিত হয়েছে।
আরো পড়ুন: ব্যাংক ও বীমার মধ্যে পার্থক্য - বীমা কি ও কেন
গ্রামীন ব্যাংকের কার্যক্রম
ব্যাংক থেকে প্রায় আমরা আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে থাকি। বাংলাদেশে অনেকগুলো ব্যাংক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে, যেগুলো জনগনের সেবা প্রদান করে থাকছে। সেগুলোর মধ্যে এমন একটি ব্যাংকের নাম হলো গ্রামীণ ব্যাংক। সংবিধিবদ্ধ একটি প্রতিষ্ঠান হলো গ্রামীন ব্যাংক। গ্রামীন ব্যাংক গরীব দুঃখিদের সহযোগিতা করায় ছিল এর প্রথম উদ্দেশ্য। গ্রামীন ব্যাংক দারিদ্র ও অসহায় মানুষের আর্থিকভাবে কম সুদে ঋন প্রদান করে সহযোগিতা করে থাকে। এছারাও গ্রামীন ব্যাংকের বেশ কিছু কার্যক্রম রয়েছে। যেগুলোর সম্পর্কে আমরা বিস্তারিতভাবে জানি না। গ্রামীন ব্যাংকের কার্যক্রমগুলো কি, অনেকের জানা নেয়। তো চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক গ্রামীন ব্যাংকের কার্যক্রমগুলো কি কি।
- দারিদ্রতা মুক্ত করতে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে গ্রামীণ ব্যাংক। এ ব্যাংকটি খুবই আগ্রহ প্রকাশ করে থাকে গরীব দুঃখীদের সহযোগিতা করার জন্য।
- প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় দারিদ্রর পাশে দাড়াচ্ছে গ্রামীণ ব্যাংক। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন, বন্যা, ঘূর্নিঝড়, নদীভাঙন এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ মানুষকে অসহায় করে দেয়। বন্যার সময় মানুষের আয়ের কোনো উৎসা থাকে না বললেই চলে। আর সে সময় মানুষের পাশে এসে সহযোগিতা করে থাকে গ্রামীন ব্যাংক।
- এমন অনেক পরিবার আছে, যারা দিন এনে দিন চালায় এবং অনেক কষ্ট করে তাদের সন্তানদের পড়ালেখা শেখায়। তবে পড়ালেখা শেষ হওয়ার পর টাকার অভাবে তাদের চাকরি হচ্ছে না। আর সেসব মানুষের পাশে এসে সহযোগিতা করে থাকে গ্রামীন ব্যাংক।
- এ ব্যাংকের ঋন পরিশোধ করার হার ৯৮% হয়ে থাকে। যার কারনে এ ব্যাংক থেকে ঋন নেওয়া সহজ হয়ে থাকে।
- গ্রামীন ব্যাংক ক্ষুদ্র ঋন প্রকল্প হওয়ায় দারিদ্র মানুষের অনেক বড় ধরনের সুবিধা হয়ে থাকে। গ্রামীন মানুষের পাশে দাড়িয়ে অনেক লোন গ্রামীন ব্যাংক দিয়ে থাকে। এছারাও বিভিন্ন ধরনের ব্যাংকিং সুবিধা গরিব নারী ও পুরুষেরা পেয়ে থাকে।
এ ছিল গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রম, আশা করি গ্রামীন ব্যাংকের কার্যক্রমগুলো সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন।
গ্রামীন ব্যাংকের মালিক কে
গ্রামীন ব্যাংক জনগনের আস্থা বহনকারী একটি ব্যাংক। জনগনের নিত্য প্রয়োজনে এ ব্যাংক সহায়তা করে থাকে। খুবই বিশ্বাস ও নির্ভরযোগ্য ব্যাংক এটি। এই ব্যাংক কোনো অবৈধ কাজে জড়িত নয় বরং ১৯৮৩ সাল থেকে বৈধ ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। গরীব দুঃখীদের সহযোগিতা করার মুখ্য উদ্দেশ্যই হলো গ্রামীন ব্যাংকের প্রধান কার্যক্রম। শুধু গরীব দুঃখীদের নয় বাংলাদেশের অসংখ্যা জনগনকে লোন দিয়ে ও আরও বিভিন্ন উপায়ে সহযোগিতা করে থাকছে গ্রামীন ব্যাংক।
এই ব্যাংকের মালিক নিয়ে বর্তমান সময়ে খুবই বিতর্ক হচ্ছে। তাই অনেকেই জানতে আগ্রহী গ্রামীন ব্যাংকের মালিক কে। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক গ্রামীন ব্যাংকের বর্তমান মালিক কে।
গ্রামীন ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাত ধরে। যিনি এখন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হয়ে আছেন। গ্রামীন ব্যাংক প্রকল্প হাতে নিয়ে দারিদ্র বিমোচন এর মধ্য দিয়ে দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠিত করায় তিনি ২০০৬ সালে নোবেল পুরষ্কার পেয়েছিলেন। তিনি শুরু থেকে গ্রামীন ব্যাংকের পরিচালনা করে আসছিলেন। তবে ২০১১ সালে পরিচালকের পদ থেকে তাকে অপসারন করা হয়। তাকে এ যুক্তি দিয়ে অপসারন করা হয় যে তিনি বয়সসীমা অতিক্রম করে গেছেন। এরপর তিনি যখন সরে গেলেন, তখন থেকে পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন বেশ কয়েকজন, যাদের মধ্যে রয়েছেন- নুরজাহান বেগম, এ এস এম মহিউদ্দিন, রতন কুমার নাগ, মো.শাহজাহান, বাবুল সাহা, আবুল খায়ের মো. মনিরুল হক, জাহাঙ্গীর হোসেন হাওলাদার, রহিম খান ও মোসলেম উদ্দিন।
তবে বর্তমান সময়ে এ গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ করা হয়, ফারহানা ফেরদৌসীকে’ যিনি সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগি অধ্যাপক। আর চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন আবদুল হান্নান চৌধুরী।
আশা করি গ্রামীণ ব্যাংকের মালিক কে এ বিষয়ে ধারনা পেয়ে গেছেন।
আরো পড়ুন: পূবালী ব্যাংক কি সরকারি - পূবালী ব্যাংক এর সুবিধা
গ্রামীন ব্যাংকের সুদের হার কত
বাংলাদেশে অসংখ্যা ব্যাংক রয়েছে। আর সেগুলোর মধ্যে যে ব্যাংকগুলো অল্প সময়ের মধ্যে উন্নতি সাধন করছে, তার মধ্যে গ্রামীন ব্যাংক একটি। জনগনের পাশে আস্থা ও বিশ^স্ততার সাথে রয়েছে এ ব্যাংকটি। এ ব্যাংকের বিশেষ সুবিধাগুলো হলো-
- এ ব্যাংকের একটি বিশেষ সুবিধা হলো বিনিয়োগ স্বল্প কিন্তু জনগনকে ভালো মানের অর্থ আয়ের সুযোগ করে দিয়েছে।
- আপনার যদি কোনো কারনে দ্রুত ঋনের প্রয়োজন হয়। তাহলে এ ব্যাংক থেকে অল্প সময়ের মধ্যে লোন পেয়ে যাবেন।
- গ্রামীন ব্যাংকের ৯৮% ঋন পরিশোধের হার হয়ে থাকে।
- দীর্ঘদিন ধরে এ ব্যাংক মানুষকে আস্থার সাথে সেবা দিয়ে থাকছে, তাই এটি একটি আস্থাযুক্ত ব্যাংক।
আর এ ব্যাংকটি আস্থাযুক্ত এবং উপরের সুবিধাগুলো থাকার কারণে এ ব্যাংক থেকে অনেকেই লোন নিতে আগ্রহী। আর তাই যারা এ ব্যাংক থেকে লোন নিতে চাইছেন তাদের জানা প্রয়োজন গ্রামীন ব্যাংক এ সুদের হার কত।
গ্রামীন ব্যাংক থেকে বিভিন্ন ধরনের লোন আপনি নিতে পারেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-ক্ষুদ্র ঋন, কৃষি ঋন, পশু সম্পদ ঋন, উদ্যোক্তা ঋন, হাউজ ঋন, শিক্ষা ঋন, ব্যাক্তিগত ঋন । গ্রামীন ব্যাংকের বড় একটি সুবিধা হলো এ ব্যাংকে সুদের হার অনান্য ব্যাংকের থেকে অনেকটাই কম হয়ে থাকে। বর্তমানে গ্রামীন ব্যাংকের সুদের হার ৬% ধরা হয়ে থাকে। তবে এমন কিছু বিষয়ের ওপর ঋন রয়েছে যেগুলোতে সুদের হার কম বেশি হয়ে থাকে। যেমন ধরুন শিক্ষা ও পশু ঋনে কিছু সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায়।
দারিদ্র বিমোচনে গ্রামীন ব্যাংকের ভূমিকা
বর্তমানে বাংলাদেশের অধিকাংশ জনসংখ্যা গ্রামে বাস করে। এ জনসংখ্যার অনেকেই এখনও দারিদ্র রয়ে গেছেন। আর সে দারিদ্র জনগোষ্ঠীর পাশে দাড়াচ্ছে গ্রামীন ব্যাংক। বলা হয়ে থাকে গরীবের ভরসার ব্যাংক হলো গ্রামীণ ব্যাংক। আজও কি কথাটি সত্য, অনেকেই বিষয়টিকে সন্দেহের চোখে দেখে। তো চলুন তাহলে বিস্তারিত ভাবে জেনে নেওয়া যাক দারিদ্র বিমোচনে গ্রামীন ব্যাংকের ভূমিকাগুলো আসলে কি।
গ্রামীন ব্যাংকের সূচনা করেছেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস। দারিদ্র জনগোষ্ঠিদের বড় ধরনের ঋন নেওয়া সম্ভব হয় না। যার কারনে তাদের দারিদ্রতা আরও বেড়ে যায়। তাই এদিক বিবেচনায় মুহাম্মদ ইউনূস দারিদ্রদের কথা ভেবে ক্ষুদ্র ঋনের একটি মাধ্য হিসেবে গ্রামীন ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত করার উদ্যোগ গ্রহন করেন। গ্রামের ভূমিহীন মানুষদের সহজ শর্তে ক্ষুদ্র ঋন দিয়ে থাকছে গ্রামীন ব্যাংক। ঋন দিতে তাদের কাছ থেকে কোনো প্রকার জামানত নেওয়া হয় না। যার কারনে ভূমিহীনদের বড় ধরনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
এমন অনেক দারিদ্র রয়েছেন যারা একেবারেই নিঃস্ব, তাদের কিছু নেয়। আর সেসব দারিদ্র মানুষদের ঘর তৈরি, হাঁস মুরগির খামার তৈরি এবং ক্ষুদ্র প্রকল্প তৈরিতে বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করে থাকে গ্রামীন ব্যাংক। যেসব দারিদ্র ব্যাক্তিরা কুটিরশিল্প প্রকল্প তৈরি করতে চাই, তাদের বিভিন্ন সরঞ্জাম ক্রয় করতে কম সুদে ঋন দিয়ে সহায়তা করে থাকে গ্রামীন ব্যাংক।
এছারাও অনেক দারিদ্রদের কর্মসংস্থানের ব্যাবস্থা করে দেয় গ্রামীন ব্যাংক। দেশের প্রায় মানুষ দারিদ্রতায় বাস করছেন এবং তাদের সে দারিদ্র অবস্থা থেকে বের হওয়া কঠিন হয়ে যায়। আর সে কঠিন সময়ে তাদের পাশে থাকে গ্রামীন ব্যাংক। তাদের দারিদ্রতা কাটিয়ে উঠতে ব্যাপকভাবে সহায়তা করে থাকে গ্রামীন ব্যাংক। গ্রামীন ব্যাংকের মূল উদ্দেশ্যই হলো দারিদ্রদের পাশে দাড়ানো এবং তাদের সাহায্য করা।
বাংলাদেশের দারিদ্রদের বড় একটি সুবিধা হলো বিনা জামানতে ঋন দেয় গ্রামীন ব্যাংক। সুতরাং এ আলোচনা থেকে আমরা বুঝতে পারি দারিদ্র বিমোচনে গ্রামীন ব্যাংকের অনেক ক্ষেত্রে ভূমিকা রয়েছে।
অর্থনৈতিক উন্নয়নে গ্রামীন ব্যাংকের ভূমিকা
অর্থনৈতিক উন্নয়ন হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যার মধ্য দিয়ে একজন ব্যক্তির, একটি জাতি , অঞ্চল বা সম্পদ্রায়ের জীবনযাত্রার মান উদ্দেশ্য অনুসারে উন্নত করা। আর গ্রামীন ব্যাংক সেটা করতে সহায়তা করে থাকে। আমরা অনেকেই ভেবে থাকি গ্রামীন ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে শুধু মুনাফা অর্জনের জন্যই। কিন্তু গ্রামীন ব্যাংক শুধুই যে মুনাফা অর্জন করে তা না। মুনাফা অর্জন ছাড়াও আরও বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। যার একটি হলো দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখা। অর্থনৈতিক উন্নয়নে গ্রামীন ব্যাংকের ভূমিকা কতটুকু বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
উন্নত ব্যাংক ব্যবস্থাগুলো ছাড়া দেশের, শুধু দেশের নয় সারা বিশে^র অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব নয়। আর গ্রামীন ব্যাংক ও সে কাজ শুরু থেকেই করে যাচ্ছে। গ্রামীন ব্যাংকের সেবা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে থাকে। গ্রামীন ব্যাংকের উদ্দেশ্য যে শুধু ঋন লেনদেন করা তা কিন্তু নয়। এ ব্যাংক ভোক্তাদের বিভিন্ন সেবা প্রদান করে থাকে। দেশের অর্থনৈতিক চাকা সবল রাখতে মুলধন অত্যান্ত প্রয়োজন। আর গ্রামীন ব্যাংক মূলধন সৃষ্টি করে থাকে। জনগনের দেওয়া অর্থ গ্রামীন ব্যাংক গ্রহন করে মূলধন সৃষ্টি করে থাকে এবং দেশের বিভিন্ন অর্থনৈতিক খাতে ব্যবহার করা হচ্ছে সেই সৃষ্টিকৃত মূলধন।
গ্রামীন ব্যাংক ঋনের প্রসার ও সয়কোচন ঘটিয়ে থাকে, যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করে থাকে। গ্রামীন ব্যাংক জনগনের আস্থার ব্যাংক হয়ে উঠেছে,যার ফলে অনেক মানুষ সঞ্চয়ী হয়ে উঠেছে। আর জনগন সঞ্চয়ী হওয়ার কারনে, সেটা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ওপর সুপ্রভাব পড়েছে।
দেশে বেকারের হার যত কমবে অর্থনৈতিক চাকা ততই সচল হবে। আর গ্রামীন ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় হাজারো মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। বহুলোক বেকার পথ থেকে সরে কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছে। যার ফলে অর্থনীতির ওপর প্রভাব পড়েছে অনেকটাই।
এসব বিবেচনায়, গ্রামীন ব্যাংককে অর্থনৈতিকের ধারক বলা হয়। লক্ষ লক্ষ মানুষ ব্যাংক এ সঞ্চয় করে থাকছে, যার ফলে অর্থনৈতিক ভাবে উন্নয়ন ঘটছে। কৃষি উন্নয়ন, শিল্প উন্নয়নে, ব্যাবসা বানিজ্যে এসব বিভিন্ন খাতের উন্নয়নে গ্রামীন ব্যাংক বিশেষ ঋনের ব্যাবস্থা করে দেয় যার ফলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়ে থাকে।
তাই বলা যায় অর্থনৈতিক উন্নয়নে গ্রামীন ব্যাংকের ভূমিকা অপরিসীম।
আরো পড়ুন: ঘরে বসে বিনা পুঁজিতে ব্যবসা - ঘরে বসে ক্ষুদ্র ব্যবসা
লেখকের শেষ বক্তব্য
দারিদ্র বিমোচনে গ্রামীণ ব্যাংকের ভূমিকা সম্পর্কে আজকের এই ব্লগে সকল তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি দারিদ্র বিমোচনে গ্রামীণ ব্যাংকের ভূমিকা সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনি এই ধরনের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ব্লগ পোস্ট নিয়মিত পড়তে চান তাহলে আপনাকে প্রতিনিয়ত আমাদের এই ওয়েবসাইট ফলো করতে হবে।